শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ অপরাহ্ন

মামলা করায় সার্জেন্টকে ধাওয়া করল শ্রমিকরা

মামলা করায় সার্জেন্টকে ধাওয়া করল শ্রমিকরা

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল এলাকায় সড়কের ওপর যত্রতত্রভাবে বাস পার্কিং করে রাখা হয়। এ জন্য দিনের পর দিন ওই এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এভাবে সড়কে বাস পার্কিং করে রাখার অভিযোগে মামলা করায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক সার্জেন্ট ধাওয়া দিয়েছেন শ্রমিকেরা। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে শিরোইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

শিরোইল এলাকায় শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বাস টার্মিনালে গাড়ি না রেখে সড়কে পার্কিং করা হয় অনেক আগে থেকেই। এ কারণে যানজট ওই এলাকার নিত্যসঙ্গী। এ কারণে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতি নগরবাসীর ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। তবে এবার এসব বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে তোপের মুখে পড়ে ট্রাফিক পুলিশ। পরিবহন শ্রমিকেরা একজন ট্রাফিক সার্জেন্টকে রীতিমতো ধাওয়া করেছেন। এছাড়া তারা কয়েক মিনিট সড়কও অবরোধ করে রাখেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে ট্রাফিক কার্যালয়ে উভয়পক্ষ আলোচনায় বসে সড়কে বাস না রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, সড়কে যত্রতত্রভাবে বাস রাখার জন্য রোববার সড়ক পরিবহন আইনে তিনটি মামলা করা হয়েছে। কিন্তু সোমবার সকালেও একইচিত্র দেখা যায়। এ কারণে একটি বাসের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় এবং মামলা দেওয়ার জন্য আরও দুটি বাসের কাগজপত্র নেওয়া হয়। এ সময় শ্রমিকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন। এরপর শিরোইল ঢাকা বাস স্ট্যান্ডের সামনে এসে সড়কের একপাশ অবরোধ করেন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মামলা করার কারণে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট রাশেদুল ইসলাম ভিডিও করছিলেন। এ সময় শ্রমিকেরা তাকে ধাওয়া দেন। শ্রমিকদের ধাওয়ায় তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ নিয়ে কথা বলার জন্য সার্জেন্ট রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (প্রশাসন) সাইদুর রহমান বলেন, ‘ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে কি না তা আমার জানা নেই। তবে দুইদিনে চারটি মামলা দেওয়ার কারণে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। দ্রুতই আমরা পরিস্থিতি শান্ত করে বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসেছি। আমাদের অফিসেই তাদের ডাকা হয়েছিল। তারা কথা দিয়েছেন যে, ওই এলাকায় তারা আর সড়কে গাড়ি পার্কিং করবেন না।’

রাজশাহী বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাফকাত মঞ্জুর বলেন, ‘বাসের শ্রমিকেরা রাস্তার ওপর গাড়ি রেখে চলে যান। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাস সড়কেই থাকে। এখন পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। এ নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তবে আমরা পুলিশের সঙ্গে বসেছিলাম। সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন থেকে কেউ যাতে সড়কে গাড়ি না রাখেন সে বিষয়টি সবাইকে ভালভাবে বলে দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, শিরোইল এলাকাকে যানজটমুক্ত করতে নগরীর উপকণ্ঠ নওদাপাড়ায় ২০০৪ সালে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও শিরোইল বাস টার্মিনাল বন্ধ করা হচ্ছে না। এর ফলে প্রতিনিয়ত ওই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। এ নিয়ে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গতবছরের সেপ্টেম্বরে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি শ্রমিকদের সঙ্গে বসে একমাসের মধ্যে শিরোইল বাস টার্মিনাল বন্ধ করে সব বাস নওদাপাড়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দেন। শ্রমিক-মালিকেরাও ১ নভেম্বর থেকে এই টার্মিনাল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি গত ৯ মাসেও রাখেননি শ্রমিকেরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877